top of page
Search
BAU Rover Scout Group

দার্জিলিং ও কলকাতায় বাকৃবি রোভার স্কাউট গ্রূপ

শামসুদ্দোহা পিয়াস


প্রিয় লেখক #সুনীল_গঙ্গোপাধ্যায় ও #সমরেশ_মজুমদার এর লেখায় #শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, #দার্জিলিং, #কালিম্পং, #গ্যাংটক প্রভৃতি জায়গার গল্প পড়ে কত ছবি কল্পনা করতাম ! কত্তো পরিকল্পনা চলছিল সেই ২০১৩ সাল থেকেই। অবশেষে সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০ হতে ২০অক্টোবর ২০১৮ ঠিক হল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনের অনুমতি ও সহযোগীতায়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট গ্রূপের উদ্যোগে আয়োজিত প্রথম আন্তর্জাতিক ট্যুরের জন্য ১০ জন রোভার, ১০ জন গার্ল-ইন-রোভার ও ৫ জন রোভার স্কাউট লিডার নিয়ে সর্বমোট ২৫ জনের দল ঠিক হল। ট্যুরের দলনেতা হিসেবে নির্ধারিত হলেন রোভার স্কাউট লিডার ড. নাজমুল হক স্বপন স্যার। অন্য ৪ জন সম্মানিত রোভার স্কাউট লিডার হিসেবে আমাদের সঙ্গী হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মোঃ সাইফুল ইসলাম, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক জনাব ড. কে. এইচ.এম. নাজমুল হুসাইন নাজির, ডেপুটি রেজিস্ট্রার জনাব জহিরুল আলম এবং ক্রীড়া প্রশিক্ষণ বিভাগের সহকারী পরিচালক জনাব মোঃ শাহ্ ফছি উল্লাহ (অপু)।


১০ অক্টোবর, রাত সাড়ে ৮ টায় পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ময়মনসিংহ শহরের ব্রীজ মোড়ে যশোদা বাস কাউন্টার হতে যাত্রা শুরু হল। ট্যুরের প্রথম দিন আমাদের গন্তব্য #বুড়িমারী স্থলবন্দর। সারা রাতের ভ্রমণ শেষে পরদিন সকাল ৭ টায় বুড়িমারী পৌঁছে ফ্রেশ হয়ে সবাই একসাথে বুড়ির হোটেলে নাস্তা করি। নাস্তা শেষে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বর্ডার খোলার পর আমরা ইমিগ্রেশন অফিসে গিয়ে ডিপার্চার ফরম ফিলাপ করে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এর কাজ সম্পন্ন করে ভারতের চ্যাংড়াবান্দা ইমিগ্রেশন অফিসে প্রবেশ করি । সেখানেও কোন ঝামেলা ব্যতীত অ্যারাইভাল ফরম পূরণ করে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ফর্মালিটিজ সম্পন্ন করি। ইমিগ্রেশন পার হয়ে সামনেই গাছ-পালার মধ্যে কিছু দোকান ও মানি এ্যাক্সেেচঞ্জ কাউন্টার দেখতে পেলাম।সেখান হতে ডলার ও টাকা পরিবর্তন করে

চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দরেপ্রবেশ মুহূর্ত

রুপি নিলাম। এরপর আমাদের গন্তব্য শিলিগুড়ি। বর্ডার হতে অটোতে করে চ্যাংড়াবান্ধা বাজার এসে বাসে করে বিকাল ৩টায় শিলিগুড়ি পৌঁছাই। শিলিগুড়িতে পৌঁছেই মনে হলো আজ সেই স্বপ্নের শহরেই আমি দাঁড়িয়ে আছি। যাইহোক, শিলিগুড়িতে দুপুরের খাবার খেয়ে আমরা ৩ টি টাটা সুমো জিপ রিজার্ভ করে বিকাল ৫ টায় দার্জিলিং এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। শিলিগুড়ি হতে কিছু সমতল পথ অতিক্রমের পরেই আমরা রাস্তার দুই ধারে চা বাগান আর পাহাড় দেখতে পাই।পাহাড় কেটে বানানো রাস্তা আর চা বাগানের মাঝখান দিয়ে যেতেই আমাদের অ্যাডভেঞ্চার শুরু হয়ে গেল। যেন পাহাড়গুলো আমাদের ডাকছে। আঁকাবাঁকা পাহাড়ী রাস্তার মাঝদিয়ে যখন আমরা অতিক্রম করছিলাম রাতের বেলা সোডিয়াম বাল্বের আলোতে উপর হতে নিচের ছোট ছোট বাড়ি গুলো অসম্ভব সুন্দর লাগছিল। জিপ যত সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, ততই আমরা উপরের দিকে উঠছি। নিচ হতে যে চূড়াটা সর্বোচ্চ মনে হচ্ছিল, ঐ টাকেই মনে হচ্ছিল দার্জিলিং শহর। কিন্তু সে চূড়ায় উঠার পর আবারও অনেক উপরে পাহাড় দেখা যাচ্ছিল। এভাবেই রাতের অসম্ভব সুন্দর এই সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে ৮ টার দিকে আমরা দার্জিলিং পৌঁছে গেলাম। দার্জিলিং শহরে রাত ৮ টার মধ্যেই প্রায় সব দোকান ও হোটেল বন্ধ হয়ে যায়। তাই দার্জিলিং পৌঁছেই ইসলামিয়া হোটেলে রাতের খাবার সেরে আমাদের পরবর্তী তিনদিনের ঠিকানা হোটেল সোমেরুতে পৌঁছে গেলাম।


ট্যুরের তৃতীয় দিন সকালের নাস্তা সেরে হেঁটে হেঁটেই আমরা #পদ্মজা_নাইডু_জ্যুওলজিক্যাল পার্কে পৌঁছে গেলাম। সেখানে চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন পশু-পাখি ছাড়াও আমরা হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট ও জাদুঘর দেখলাম।পর্বতারোহণে প্রশিক্ষণের জন্য এ প্রতিষ্ঠানটির বেশ খ্যাতি রয়েছে।

তেনজিং নরগে এর ভাস্কর্য্য

এভারেস্টে যারা আরোহণ করতে চায়, তাদের জন্য এই ইনস্টিটিউট তীর্থ যাত্রার মত। এখানে তাদের আবাসিক সুবিধাসহ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ইনস্টিটিউটটি #তেনজিং_নরগে এর সম্মানে প্রতিষ্ঠা করা হয়। মিউজিয়ামের সামনে তেনজিং নরগে এর একটা মূর্তি রয়েছে। জাদুঘরে পৃথিবীর প্রথম দুই পর্বতারোহী তেনজিং ও হিলারী থেকে শুরু করে এপর্যন্ত ঘটনাবহুল ও বিখ্যাত সব পর্বতারোহী ও আরোহণের তথ্য সম্পর্কে জানতে পারি। সেখান হতে বের হয়ে দুপুরের খাবার সেরে আমরা হ্যাপীভেলী টি গার্ডেনে চলে যাই। উঁচু পাহাড়ের উপত্যকায় গড়ে উঠেছে এই চা বাগান। প্রতি জন ১০০ রুপি দিয়ে টিকেট কেটে পাহাড়ের উপত্যকায় আমরা টি-গার্ডেনের অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করি। চা বাগানের কর্মকর্তার আন্তরিক সহায়তায় চা বাগান হতে চা পাতা আহরণ হতে শুরু করে কারখানায় চা প্রসেসিংয়ের সবগুলো চেম্বার ঘুরে ঘুরে


হিমালয়ান ইনস্টিটিউট জাদুঘর এর সামনে

আমরা বিভিন্ন ধরনের চা তৈরীর কলাকৌশল সম্পর্কে জানি । এরপর চা বাগান কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে বিভিন্ন রকম চা এর স্বাদ নেয়ার অফার করেন। আমরা সেই অফার সাদরে গ্রহণ করে নিজেদের পছন্দমাফিক চা কিনে নিয়ে আসি। চা বাগান দেখা শেষে আমরা দার্জিলিং শহরে পর্যটকদের প্রাণকেন্দ্র মল চত্ত্বরে গিয়ে সবাই স্ট্রিটফুডের মজা নিয়ে মল মার্কেটে ঘুরতে বের হই। ঘুরাঘুরি শেষে সবাই মিলে হোটেল মহাকালে রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে ফিরি।


পাহাড়ের অপরুপ সৌন্দর্যের মাঝে হ্যাপীভ্যালী টি এস্টেটে

ট্যুরের চতুর্থদিন ছিল আমাদের জন্য সবচেয়ে রোমাঞ্চকর। এই দিন ভোর ৪ টায় আমরা টাটা সুমো জিপে করে টাইগার হিলে চলে যাই। দার্জিলিং শহর হতে ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টাইগারহিল পৃথিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘায় সূর্যোদয় দেখার ভিউপয়েন্ট হিসেবে খ্যাত। শেষ রাত থেকে অসংখ্য জিপ আর হাজার হাজার পর্যটকের কোলাহলে পূর্ণ হয়ে উঠে এই #টাইগারহিল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ৫৫৫ মিটার (৮ হাজার ৪ শত ৮২ ফুট) উঁচু টাইগারহিলের ভিউপয়েন্টে দাঁড়িয়ে কফি পান করতে করতে কাঞ্চনজঙ্ঘার সাদা বরফের রাজ্যে সূর্যের প্রতিফলনে বহু বর্ণিল আলোর ঝলকানি দেখার সাথে সাথে হাজারো পর্যটকের আনন্দধ্বনি শোনা জীবনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আকাশ পরিষ্কার থাকলে টাইগার হিল থেকেই পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট দেখা যায়।

টাইগার হিলে কাঞ্চনজঙ্ঘায় সূর্যোদয় দেখার পর

টাইগারহিলে দাঁড়িয়ে উদীয়মান সূর্যের প্রথম রশ্মি কাঞ্চনজঙ্ঘার সাদা বরফে পড়া দেখে ফেরার সময় আমরা কিছুটা সময় বাতাসিয়া লুপ, #ঘুম_মনেস্ট্রি আর পৃথিবীর সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত ঘুম রেল স্টেশনে কাটাই। বাতাসিয়া লুপ এবং #ঘুম_রেল_স্টেশন এখন ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের অংশ।এই বাতাসিয়া লুপ এবং রেলস্টেশন বারেললাইনও সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে অনেক উপরে। বাতাসিয়া পাহাড়ের সবচেয়ে উঁচু শেষ মাথা ছুয়ে এসেছে রেল লাইন। ২ ফুট শর্ট গেজের রাস্তা। অনেকটা খেলনা রেললাইনের মতো বলে এর নাম টয়ট্রেন। এখানে আরও রয়েছে যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে শ্বেত পাথরে বাঁধানো একটি স্মৃতিস্তম্ভ, চতুর্দিকে রয়েছে সাজানো গোছানো সুন্দর ফুলের বাগান। আবহাওয়া পরিষ্কার থাকলে এখান থেকেও কাঞ্চনজঙ্ঘারদৃশ্য অবলোকন করা যায়। আমরা এখানেও ছবি তুলে নিলাম। এরপর সকাল সাড়ে ৮ টার মধ্যেই আমরা দার্জিলিং শহরে ফিরলাম। নাস্তা সেরে জাপানিজ পিস প্যাগোডা দেখার পর আমরা রক গার্ডেনের উদ্দেশ্যে ছুটলাম। যাওয়ার পথে দার্জিলিং এর বিখ্যাত

দার্জিলিংয়ে জাপানিজ পিস প্যাগোডায়

চা বাগানগুলোর অন্যতম ওরেঞ্জ ভ্যালি টি এস্টেট পাড়ি দিতে হয়। চা বাগানের কোল ঘেঁষে আঁকা বাঁকা রাস্তার দু’পাশ জুড়ে ঘন সবুজের গালিচা। তার সাথে মেঘ আর পাহাড়ের মিতালী। এসব দেখে আমরা ছবি নেওয়ার লোভ সামলাতে পারিনি। ড্রাইভারকে বলে জিপ থামিয়ে রাস্তায়ই কিছু ছবি নিয়ে নিলাম। রকগার্ডেন দার্জিলিং শহর হতে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অনেক নিচে অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত। পাহাড়ের গা ঘেঁষে অনেক উঁচুতে উঠে গেছে কৃত্রিমভাবে তৈরী সিঁড়ি। বেশ সাজানো- গোছানো এই পিকনিক স্পটে পাহাড়ী বিশাল বিশাল ঝর্ণার স্রোত আর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে আমরা বিমোহিত হই।



রকগার্ডেনের সুবিশাল পাহাড়ী জলপ্রপাতের সামনে

পঞ্চমদিন খুব সকালবেলা সুমো জিপে করে আমরা শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। পথিমধ্যে আমরা সীমানা ভিউ পয়েন্টে সকালের নাস্তা সেরে খুব কাছে থেকে #নেপাল বর্ডার অবলোকন করি এবং মিরিক লেকের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। #মিরিক লেকে অসাধারণ কিছু মুহূর্ত কাটিয়ে আমরা পুনরায় শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। বিকাল ৪ টায় শিলিগুড়ি পৌঁছে আমরা সেদিন রাতেই শ্যামলী পরিবহনের বাসে কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি। জীবনে এই প্রথম দু’তলা বাসের উপরতলায় সিট। তবে কোন ধরনের সমস্যা ছাড়াই সারা রাত জার্নি করে পরদিন সকাল ১১ টায় আমরা কলকাতার ধর্মতলা স্টেশনে পৌঁছাই।

মিরিক লেকের ফ্লোটিং হ্যান্ডিক্র্যাফট মার্কেটের সামনে

কলকাতায় আগে থেকে আমাদের হোটেল বুকিং দেওয়া ছিল না। ট্যুরের দলনেতা স্বপন স্যার ও

রোভার স্কাউট লিডার অপু ভাই আমাদের ধর্মতলা স্টেশনে রেখে হোটেল ম্যানেজ করতে যান। হোটেল ম্যানেজ করার পর আমরা সবাই হোটেলে যাই। আমাদের পরবর্তী ঠিকানা হয় মির্জা গালিব স্ট্রিটের হোটেল গ্রীণল্যান্ড। হোটেলে পৌঁছে ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নিয়ে আমরা কলকাতার বিখ্যাত পার্ক স্ট্রিট রোডের আশেপাশে ঘুরে মাটির কাপে চা ও কলকাতারস্ট্রিট ফুডের স্বাদ নিয়ে নিলাম। স্ট্রিট ফুড হলেও অধিকাংশ খাবারই স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু মনে হয়েছে। সবাই ফলমূল ও অন্যান্য সবকিছু অনেক মজা করেই খেলাম।


কলকাতার স্ট্রিট ফুড

ট্যুরের সপ্তম দিনে আমরা কলকাতার সাইন্স সিটি ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল জাদুঘর দেখি। সাইন্স সিটি একটি বিজ্ঞান সংগ্রহশালা ও বিজ্ঞানকেন্দ্রিক বিনোদন উদ্যান। কলকাতাবাসীর কাছে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করে তোলার উদ্দেশ্যে পূর্ব কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস ও জেবিএস হ্যালডেন অ্যাভেনিউ’র সংযোগস্থলে ৫০ একর জমির উপর ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই এর উদ্বোধন করা হয়। আর, উইলিয়াম এমারসনের চোখ ধাঁধানো স্থাপত্য হল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল প্রাসাদ। নিরিবিলি প্রশান্ত পরিবেশে

মার্বেল পাথরের কারুকার্যে তৈরী এ ভবনজাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভবন থেকে বের হলেই চারপাশে ময়দান আর সারিসারি গাছ পালা। এ ভবনের চারপাশের রাস্তায় বেশ পুরু করে পাথর বিছানো।হাঁটলেই মনে হয় পাথরের ঝঙ্কার কানে বাজে। নিরিবিলি পরিবেশে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর চারপাশের উদ্যানকে মনে হল কর্মব্যস্ত কলকাতার একটুকরো প্রশান্তির আশ্রয়। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল দেখা শেষে আমরা আবার নিউমার্কেট যাই। সেখানে দূর্গা পূজোর আমেজে কিছু সময় কাটিয়ে ও কেনাকাটা করে রাতের খাবার শেষে আমরা হোটেলে ফিরি।


কলকাতার সাইন্স সিটি পরিদর্শনে

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে

অষ্টম দিনে আমরা হাওড়া ব্রীজ, হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন, কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ি, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দেখি। হাওড়া ব্রীজ পৃথিবীর ষষ্ঠ দীর্ঘতম ক্যান্টিলিভার ব্রীজ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামানুসারে একে রবীন্দ্রসেতুও বলা হয়। ব্রীজ থেকে আমরা নদীর মনোরম দৃশ্য উপভোগ করি। ১৮ শতকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর নির্মিত বিখ্যাত জোড়াসাকোর ঠাকুর বাড়িটি বর্তমানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়। ভবনের একাংশ জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয় যেখানে দেখতে পাওয়া যায় ঠাকুরদের সেই প্রতাপশালী জীবন। ভারতবর্ষের ইতিহাসে এই পরিবারের অবদান সহজেই এই জাদুঘর দেখে বুঝা যায়।

কলকাতার রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে

কলকাতার ট্রাম, মেট্রো রেল, হাতে টানা রিকশা, স্ট্রিট ফুডের অসাধারণ স্বাদ আর দূর্গা পূজার উৎসবে আমাদের দিনগুলো ভালোই চলছিল। কিন্তু ক্যালেন্ডার তো আর বসে নাই। প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের আতিথেয়তায় সকলে মিলে একসাথে হৈ-হুল্লোড়ে কোন দিকে দিয়ে আটটি দিন অতিবাহিত করে ফেললাম তা টেরই পেলাম না। ঐ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুণছে। তাই তো নবম দিনে আমাদের বাংলাদেশে ফেরার পালা। হোটেল থেকে সকাল ১১ টায় বের হয়ে আমরা শিয়ালদহ স্টেশনে আসি। শিয়ালদহ স্টেশন হতে লোকাল ট্রেনে প্রায় ৩ ঘন্টায় বনগাঁও স্টেশনে এসে ট্যাক্সিতে #হরিদাসপুর বর্ডারে আসি। বর্ডার প্রায় বন্ধ হওয়ার অবস্থায় ইমিগ্রেশনে কর্মকর্তাদের আন্তরিকতায় দ্রূত ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস সম্পন্ন করে বাংলাদেশের বেনাপোলে প্রবেশ করি। সেখান হতে শামীম বাসে করে পর দিন সকাল বেলা প্রিয় ক্যাম্পাসে প্রত্যাবর্তন করি। সঙ্গে নিয়ে আসি শ্রদ্ধেয় স্যার আর ছোট ভাই-বোনদের সাথে পরদেশে কাটানো আট দিনের অমূল্য কিছু স্মৃতি। সময় কেটে যাবে নিজস্ব গতিতে। কিন্তু বাকৃবি রোভার স্কাউট গ্রূপের প্রথম আন্তর্জাতিক ট্যুরে সবার সাথে কাটানো এ কয়টি দিনের স্মৃতি মনের মণিকোঠায় রয়ে যাবে চিরদিন। ব্যস্তময় জীবনে হয়তো মাঝে মাঝেই মনের মধ্যে উঁকি দিবে এই ট্যুরের হাজারো সুখস্মৃতি।

55 views0 comments

Comments


bottom of page